ই-মার্কেটিং-এর কৌশল নির্ধারণে গ্রাহক নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। সাধারণ অর্থে যারা পণ্য বা সেবাসামগ্রী অনলাইনে ক্রয় করে তাদেরকে ই-ক্রেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গ্রাহক বা ক্রেতারা আছে বলেই অনলাইন বিজনেস সম্ভব হয়েছে। গ্রাহক অনেক ধরনের আছে। কেউ আছে পণ্যটি ক্রয়ের আগ্রহ আছে, আবার এমন কেউ আছে যিনি পণ্যটি ক্রয়ের ইচ্ছা পোষণ করেছেন। আবার এমন গ্রাহকও আছেন যারা কনফার্ম পণ্যটি কিনবেন। এক্ষেত্রে অভীষ্ট গ্রাহক বাছাই করা এতটা সহজ ব্যাপার নয়। সকল মানুষ একটি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক বা ক্রেতা নন। এক্ষেত্রে আমাদের ই-মার্কেটিং বিজনেসের প্রকৃত ক্রেতা কে তা চিহ্নিত করতে হবে। নিচে নির্দিষ্ট গ্রাহক/ক্রেতা নির্ধারণ করার পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো—
১. বাজার গবেষণা পরিচালনা (Conducting market research): প্রথমেই বাজারের সকলক্ষেত্রে বিশ্লেষণ করতে হবে। আর এজন্য প্রতিষ্ঠানের শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ ও হুমকি বিশ্লেষণ করতে হবে। বাজার গবেষণায় যে সকল বিষয় জড়িত সেগুলো নিম্নরূপ—
* গ্রাহকের অবস্থান ।
* গ্রাহকের বয়স, পেশা, আয়, ইত্যাদি বিষয়।
* গ্রাহকের মন, লাইফস্টাইল, আচার-আচরণ।
* বাজার প্রবণতা ।
* গ্রাহকের ক্রয় আচরণ।
* অন্যান্য ।
২. বর্তমান ক্রেতাদের সম্পর্কে জানা (Knowing present customers) : বর্তমান ই-মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় কারা কারা তোমার ক্রেতা তা চিহ্নিত করতে হবে। অভীষ্ট বা নির্দিষ্ট গ্রাহক নির্বাচনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কারা তোমার বাজারজাতকরণকৃত পণ্য কিনছে তা জানতে হবে। কারা তোমার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছে, তাদের প্রতিক্রিয়া কী ইত্যাদিও জানতে হবে।
৩. ক্রেতা বা গ্রাহক জরিপ (Customer surveys) : গ্রাহক বা ক্রেতা নির্ধারণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হলো ক্রেতা জরিপ। ক্রেতা জরিপের জন্য যেসব হাতিয়ার আছে সেগুলো ব্যবহার করে নির্দিষ্ট গ্রাহক চিহ্নিত করা যেতে পারে।
৪. ইন্টারভিউ পরিচালনা (Conducting interviews): নির্দিষ্ট গ্রাহক নির্ধারণে তাদের সাথে সরাসরি ফোন কল করা যেতে পারে। তাদের সাথে বিভিন্ন প্রশ্ন করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। ক্রেতারা কী পেতে চায়, কীভাবে পেতে চায় তা সরাসরি ক্রেতাদের নিকট থেকে জানা যেতে পারে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে ভিডিও কলের মাধ্যমে ক্রেতাদের সাথে ইন্টারভিউ পর্ব সম্পন্ন করা যেতে পারে।
৫. প্রতিযোগী বিশ্লেষণ (Competitor analysis) : সমজাতীয় পণ্যের বিক্রয়কার্য পরিচালনা করে এমন কোম্পানিগুলো একে অপরের প্রতিযোগী। এক্ষেত্রে প্রতিযোগীরা কীভাবে তাদের নির্দিষ্ট গ্রাহক চিহ্নিত করছে সে বিষয়গুলো জানতে হবে। প্রতিযোগী কোম্পানির পণ্য কিনছে না এমন গ্রাহকদের টার্গেট করে মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করলে সফল হবার সম্ভাবনা বেশি।
৬. সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের ব্যবহার (Use of search engine optimization - SEO): এসইও (SEO) টুল ব্যবহার করে সম্ভাব্য গ্রাহকদেরকে নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রবেশের জন্য অনুরোধ জানানো যেতে পারে। সম্ভাব্য ক্রেতা বা গ্রাহকরা ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর অনেকের পণ্য ক্রয়ের আগ্রহ বাড়তে পারে ।
৭. ক্রেতার প্রতিক্রিয়া জানা (Knowing customer feedback): তোমার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে একজন গ্রাহক তার ভালো লাগা, ভালো না লাগার প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এভাবেও নির্দিষ্ট গ্রাহক চিহ্নিত করা যায়।
৮. ক্রেতাদের প্রয়োজন নির্ধারণ (Determining customer needs): ক্রেতাদের প্রয়োজন, পছন্দ বা চাহিদা জেনেও অভীষ্ট গ্রাহক নির্ধারণ করা যায়। আমরা অনলাইনে যে পণ্য বিক্রি করতে চাচ্ছি তা যদি গ্রাহকের পছন্দ হয় তাহলে সেই গ্রাহকই হবে নির্দিষ্ট গ্রাহক।
৯. সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার (Use of social media): অভীষ্ট গ্রাহক নির্ধারণের সবচেয়ে আধুনিক পদ্ধতি হলো সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্ট ইত্যাদির মাধ্যমেও আমরা সম্ভাব্য গ্রাহক নির্ধারণ করতে পারি।
Read more